একটু আগে নিউজটা পড়লাম,
'রায়েরবাজারে প্রেম ঘটিত কারণে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীর আত্মহত্যা।'
শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও , কেন যেনো এমনটাই বাস্তব হচ্ছে প্রতিদিন। একটু একটু করে পাল্টে যাচ্ছে আমাদের চারপাশটা। প্রেমের নাম করে যৌনতার অবাধ বানিজ্যিকরণের প্রভাব পড়ছে শিশুদের উপর।
কোথায় প্রেমের কচকচানি নেই ? নাটক , শিল্প-সাহিত্য , বিজ্ঞাপন , গান ,সিনেমা সব জায়গায় প্রেম। ছোটবেলা থেকেই যখন একটা শিশু এসব দেখে বড় হতে থাকে, তখন এই প্রেম জিনিসটার প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মায়। তাই দেখা যাচ্ছে টিন এজের শুরুর দিকেই বেশীরভাগ ছেলেমেয়ে জড়িয়ে পড়ছে প্রেমে। বয়ঃসন্ধির সময়টা এমনিতেই সবার জন্য একটি সংকটকাল। তাই প্রেম ঘটিত কারণে অতি আবেগের বশবর্তী হয়ে তারা আত্মহত্যার মত কাজ করে ফেলছে।
এর পিছনে যে জিনিসটা বেশী কাজ করছে , সেটা হলো টিভি চ্যানেলগুলো। শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত টিভি চ্যানেল না থাকায় , প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত অনুষ্ঠাণগুলো দেখতে হচ্ছে শিশুদের। যার ফলে শিশুদের মনোজগতে এই বিষয়গুলো বেশী আগ্রহ তৈরী করছে। অবাক লাগে, যখন দেখি শিশুদের জন্য নির্মিত রিয়েলিটি শো গুলোতে শিশুদের দিয়ে বড়দের গান গাওয়ানো হচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্কদের গানে শিশুদের নাচানো হয়। এভাবেই ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে শিশুদের মনোজগতকে।
আরেকটা বিষয় মোবাইল ফোন। যেটার ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার হয় কিশোরীরা। বেশীরভাগ বাবা মাই এখন প্রাইমারী স্কুলে থাকা অবস্থাতেই শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছেন। যার ফলে মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে অল্প বয়সেই। এ ক্ষেত্রে পুরুষটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক কেউ হয়। গ্র্যাজুয়েট লেভেলের অনেককেই দেখেছি যারা ষষ্ঠ কিংবা সপ্তম শ্রেণীর মেয়েদের সাথে প্রেম করছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতাই একমাত্র সমাধাণ।
এ দেশের শিশুরা বেড়ে উঠুক শিশুবান্ধব পরিবেশে। সুস্থ সংস্কৃতি অর সুস্থ মননের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠুক শিশুরা। রাষ্ট্র এবং অভিভাবকদের সচেতন দৃষ্টিই পারে শিশুদের একটি সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে। এ রকম খবর যাতে আর না পড়তে হয়, এটাই চাওয়া।